নারী শিক্ষা, শিক্ষায় সমসুযোগ, সংখ্যালঘুদের শিক্ষা, তফসিলি জাতি ও তফসিলি
উপজাতিদের শিক্ষা প্রসঙ্গে ভারতীয় সংবিধানে কী বলা হয়েছে ?
উঃ- ১৯৪৭ সালে ১৫ই আগস্ট ভারত
স্বাধীন হওয়ার পর ডঃ বি. আর আম্বেদকরের নেতৃত্বে গঠিত গনপরিষদ
দ্বারা ভারতের সংবিধান রচিত হয়। ১৯৫০ সালে ২৬ শে জানুয়ারি এই
সংবিধান কার্যকরী হয়। এই সংবিধানের সপ্তম তফসিলের নির্দেশক নীতির মধ্যে
শিক্ষা সম্পর্কে বহু ধারা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সেগুলির মধ্যে
আমাদের আলোচ্য বিষয় হল—
আমাদের আলোচ্য বিষয় হল—
(১) নারী শিক্ষা সংক্রান্ত ধারা,
(২) শিক্ষায় সমসুযোগ সংক্রান্ত ধারা,
(৩) সংখ্যালঘুদের শিক্ষা সংক্রান্ত ধারা,
(৪) তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতিদের শিক্ষা সংক্রান্ত ধারা।
(১) নারী শিক্ষা সংক্রান্ত ধারাঃ—
নারী শিক্ষা প্রসঙ্গে সংবিধানের
১৫(১) নম্বর ধারায় বলা হয়েছে যে, সরকার কোন নাগরিককে লিঙ্গ বৈষম্যের
ভিত্তিতে আলাদা করতে পারবে না। শিক্ষার ব্যাপারে পুরুষদের সঙ্গে সঙ্গে
নারীদের সমান অধিকার থাকবে।
(২) শিক্ষায় সমসুযোগ সংক্রান্ত ধারাঃ-
শিক্ষাক্ষেত্রে সকলের সমান সুযোগ
থাকবে। এ ব্যাপারে সংবিধানে যে ধারাগুলি উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলি
হল—
i) ২৯ নম্বর ধারা- এখানে বলা
হয়েছে যে, সরকার পরিচালিত বা
সরকারি অনুদানে পরিচালিত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্ম, জাতি, ভাষা ও
বর্ণের অজুহাতে
কোন ছাত্রকে প্রবেশাধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।
ii) ৪১ নম্বর ধারা- এখানে বলা
হয়েছে যে, প্রত্যেক
নাগরিকের শিক্ষা
পাওয়ার অধিকার আছে। রাষ্ট্রকে নাগরিকের সেই অধিকারের স্বীকৃতি হিসাবে উপযুক্ত ব্যবস্থা
গ্রহণ করতে হবে।
iii) ৪৫ নম্বর ধারা- এখানে বলা
হয়েছে যে, সংবিধান চালু হওয়ার
১০ বছরের মধ্যে রাষ্ট্রকে ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত সব ছেলে মেয়েদের শিক্ষাকে অবৈতনিক ও
বাধ্যতামূলক করতে সচেষ্ট হতে হবে।
৩) সংখ্যালঘুদের শিক্ষা সংক্রান্ত
ধারাঃ-
সংবিধানে সংখ্যালঘুদের শিক্ষা
প্রসঙ্গে যে ধারাগুলি উল্লেখ করা হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য
গুলি হল—
i) ৩০(১) নম্বর ধারা— এখানে বলা
হয়েছে যে, সমস্ত
ধর্মগত ও
ভাষাগত সংখ্যালঘুদের নিজেদের ইচ্ছামত বিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার অধিকার থাকবে।
ii) ৩০(২) নম্বর ধারা— এই ধারা
অনুযায়ী ধর্ম ও ভাষার দিক থেকে সংখ্যালঘুদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়গুলিকে সংখ্যালঘু
অজুহাতে সাহায্য
দানে রাজ্য কোন বৈষম্য করতে পারবে না।
iii) ৩৫০(১) ধারা— এই ধারায়
বলা হয়েছে ভাষাগত
সংখ্যালঘুদের সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এই জন্য প্রাথমিক স্তরের শিক্ষায়
তাদের শিক্ষার
মাধ্যম হবে মাতৃভাষা।
৪) তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতিদের
শিক্ষাঃ—
সংবিধানে তফসিলি জাতি ও তফসিলি
উপজাতিদের শিক্ষার ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এই
প্রসঙ্গে ৪৬ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্র সমাজের
দুর্বল শ্রেণি বিশেষত তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতিদের শিক্ষা ও আর্থিক উন্নতির যাবতীয়
ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং তাদের সর্বপ্রকার সামাজিক শোষণ ও অবিচার থেকে রক্ষা করবে।