বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের মতে উচ্চ শিক্ষার লক্ষ্যগুলি কী কী
হবে ?
স্বাধীনতা লাভের পর উচ্চ শিক্ষার গুরুত্ব আগের তুলনায় অনেক
বৃদ্ধি পেয়েছে, এই কথা মাথায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন বা রাধাকৃষ্ণন কমিশন
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার কতকগুলি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। সেগুলি হল
—
—
১) নেতৃত্ব গ্রহণের যোগ্যতা অর্জনঃ-
সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বদানে সমর্থ ব্যক্তি গড়ে
তোলাই হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য।
২) চারিত্রিক উন্নতি সাধনঃ-
কমিশন বলেছেন- আমরা একটা সভ্যতা গড়ে তুলতে চাই। আর একটা
সভ্যতা নির্ভর করে ব্যক্তির চারিত্রিক দৃঢ়টার উপর। সুতরাং, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা
ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক দৃঢ়টা ও মূল্যবোধ বিকাশ হবে উচ্চ
শিক্ষার লক্ষ্য।
৩) কৃষ্টির সংরক্ষণ ও প্রসারঃ-
কমিশনের মতে, ভারতীয় কৃষ্টি বা সংস্কৃতি সম্পর্কে
শিক্ষার্থীদের সচেতন করা এবং সেই সঙ্গে পাশ্চাত্য বস্তুবাদ ও ভারতীয় আধ্যাত্মবাদ
এই উভয়ের সংরক্ষণ ও প্রসার সাধনই হবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার অপর একটি অন্যতম
লক্ষ্য।
৪) গণতান্ত্রিক চেতনার সঞ্চারঃ-
ভারত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। সুতরাং, তার উপযোগী করে
শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে হবে। অর্থাৎ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার একটি অন্যতম লক্ষ্য
হবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক চেতনার সঞ্চার করা।
৫) নতুন জ্ঞান অনুসন্ধানঃ-
শুধু জ্ঞান বিতরণ করাই নয়, নতুন নতুন সত্য ও জ্ঞান
অনুসন্ধান করা হবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য।
৬) প্রাকৃতিক ও মানব সম্পদের সদ ব্যবহারঃ-
জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে অগ্রগতির জন্য প্রাকৃতিক সম্পদের
যথাযথ ব্যবহার করা হবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য। পাশাপাশি জাতীয়
উন্নতির জন্য যে মানব সম্পদের প্রয়োজন হবে বিশ্ববিদ্যালয়কে তা মেটাতে হবে।
৭) বিজ্ঞান, কারিগরি ও কৃষি শিক্ষার প্রসারঃ-
বিজ্ঞান ও কারিগরি বিদ্যা আধুনিক জগতে বিস্ময়কর পরিবর্তন
এনেছে। জাতীয় অগ্রগতি ও আর্থিক উন্নতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চ মানের বিজ্ঞান ও
কারিগরি বিদ্যার প্রসার ঘটাতে হবে। পাশাপাশি যেহেতু ভারত একটি কৃষি প্রধান দেশ,
তাই কৃষির উন্নতির জন্য উন্নত কৃষি বিদ্যার চর্চার ব্যবস্থা করতে হবে।