রাধাকৃষ্ণন কমিশন গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে কি
বলেছেন ?
উঃ- ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার পর তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার
উচ্চ শিক্ষার পুনর্গঠনের জন্য স্বাধীন ভারতবর্ষের প্রথম শিক্ষা কমিশন হিসাবে ১৯৪৮
সালে বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন নানান অনুসন্ধানের পর
উচ্চ শিক্ষার উন্নতি ও পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যে কতকগুলি
সুপারিশ করেছিলেন। সেগুলির মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য সুপারিশ ছিল গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন।
সুপারিশ করেছিলেন। সেগুলির মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য সুপারিশ ছিল গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন।
১৯৪৮ সালে কমিশন ১৯৪১ সালের লোকগণনার তথ্যগুলি বিশ্লেষণ
করে বলেন- ভারতবর্ষের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। অথচ, উচ্চ শিক্ষার জন্য
কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বেশীরভাগ শ্রে প্রতিষ্ঠিত ছিল। এর ফলে গ্রামের মানুষরা
যারা উচ্চ শিক্ষার শিক্ষা গ্রহণ করতে চাইত তাদের শহরে ছুটতে হত। কমিশনের মতে
গ্রামের মানুষ যাতে গ্রামে বসেই উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে
হবে। এর জন্য গ্রামেই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে হবে। আর এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি
গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে পরিচিত হবে।
গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার উদ্দেশ্যঃ-
গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার মূল উদ্দেশ্য ছিল গ্রামের
শিক্ষার্থীরা যাতে গ্রামে থেকেই উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে তার ব্যবস্থা করা।
গ্রামীণ শিক্ষা পরিকল্পনার স্তর বা পর্যায়ঃ-
গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় ছিল কমিশনের সুপারিশ করা একটি
পূর্ণাঙ্গ গ্রামীণ শিক্ষা পরিকল্পনার অংশ মাত্র। কমিশনের সুপারিশ করা পূর্ণাঙ্গ
গ্রামীণ শিক্ষার চারটি স্তর ছিল। এগুলি হল-
১) প্রাথমিক স্তরে ৮ বছরের প্রাথমিক শিক্ষা,
২) পরবর্তী ৩ বছরের মাধ্যমিক শিক্ষা,
৩) তার পর ৩ বছরের গ্রামীণ কলেজীয় শিক্ষা,
৪) সবশেষে ২ বছরের গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা।
গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় ছিল পূর্ণাঙ্গ গ্রামীণ শিক্ষা
পরিকল্পনার সর্বশেষ স্তর। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অধিনে থাকত কয়েকটি কলেজ বা
মহাবিদ্যালয়।
গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমঃ-
গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মূল বিষয় ছিল- দর্শন, ভাষা,
সাহিত্য, পদার্থবিদ্যা, জীববিদ্যা, রসায়ন, সমাজবিজ্ঞান ও দেহবিজ্ঞান।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে গ্রামোন্নয়ন, জনশিক্ষা, কৃষি, সামাজিক সংহতি প্রভৃতি গবেষণার
ব্যবস্থা থাকবে।
ব্যয় নির্বাহঃ- গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে রুপ
দিতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে তার দায়িত্ব গ্রহণ করবে রাষ্ট্র।