থর্ণডাইকের মুখ্য সূত্রগুলির
শিক্ষাগত প্রয়োগ বা তাৎপর্য আলোচনা কর।
উঃ- থর্ণডাইক শিখনের মুখ্য সূত্র
হিসাবে তিনটি সূত্রের কথা বলেছেন। সেগুলি হল—১) প্রস্তুতির সূত্র, ২) ফললাভের
সূত্র, ৩) অনুশীলনের সূত্র।
শিক্ষাক্ষেত্রে এই সূত্রগুলি বিশেষ
তাৎপর্যপূর্ণ। এই সূত্রগুলির মূল নীতিকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের
শিখনকে অনেক বেশী আকর্ষণীয় করে তোলা সম্ভব। নিচে সূত্রগুলির শিক্ষাগত তাৎপর্য
উল্লেখ করা হল।
উল্লেখ করা হল।
১) প্রস্তুতির সূত্রের শিক্ষাগত
তাৎপর্যঃ-
থর্ণডাইক তার শিখনের প্রস্তুতির
সুত্রে বলেছেন— শিখনের পূর্বে শিক্ষার্থীদের জৈব-মানসিক প্রস্তুতি প্রয়োজন। শিক্ষার্থী
শেখার ক্ষেত্রে জৈব-মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকলে, শিখন তার কাছে সন্তোষজনক হবে।
অন্যথায় শিখন শিক্ষার্থীর মধ্যে সন্তোষ আনতে ব্যর্থ হবে। তাই শিক্ষকের উচিত শিক্ষাদানের
পূর্বে শিক্ষার্থীদেরকে জ্ঞান আহরণের উপযোগী করে প্রস্তুত করা।
২) ফললাভের সূত্রের শিক্ষাগত
তাৎপর্যঃ-
থর্ণডাইকের শিখন সংক্রান্ত ফললাভের
সুত্র অনুযায়ী শিখনের ফল শিক্ষার্থীর কাছে আনন্দদায়ক হলে সেই শিখন কার্যকরী হবে
এবং শিখনের ফল বেদনাদায়ক হলে সেই শিখন ব্যর্থ হবে। তাই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর
শিখনকে কার্যকরী করতে পাঠ্যবিষয়বস্তু ও তার ফল উভয়কে তাদের কাছে আনন্দদায়ক করে
তুলতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ধনাত্বক আচরণের পরিপেক্ষিতে পুরস্কার
বা প্রশংসা প্রদান করে তাদের উৎসাহিত করবেন।
৩) অনুশীলনের সূত্রের শিক্ষাগত
তাৎপর্যঃ-
থর্ণডাইক তার শিখন সংক্রান্ত
অনুশীলনের সূত্রে বলেছেন—উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে সংযোগ সাধনের ফলে প্রাণীর
মধ্যে যে শিখন হয় তাকে প্রাণীর মধ্যে ধরে রাখতে শিখনলব্ধ অভিজ্ঞতাটির মাঝে মাঝে
চর্চা বা অনুশীলন করা প্রয়োজন। পরবর্তীকালে চর্চা বা অনুশীলনের অভাব হলে শিখন
ব্যর্থ হয়ে যায়। এই নীতিকে বিদ্যালয়ে শিখনের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে কার্যকর করতে
শিক্ষার্থীদের সদ্য লাভ করা অভিজ্ঞতাকে তাদের দিয়ে চর্চা বা অনুশীলন করাতে হবে।
এইভাবে অনুশীলন করলে শিখন অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীর মধ্যে দীর্ঘদিন স্থায়ী হবে।